মানব সভ্যতা বিকাশে পরিবারের ভূমিকা

 

মানব সভ্যতা বিকাশে পরিবারের ভূমিকা

পরিবার জিনিসটা খুবই এডিক্টিভ।

আপনি যত ভালোবাসবেন, তত কাজ করবেন।

যত কাজ করবেন, তত আপনার ফ্যামিলি লয়ালটি বাড়বে।

যত ফ্যামিলি লয়ালটি বাড়বে, আপনার কাছে মনে হবে এর চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আর কিছু নাই।

এরপর একটা সময় আপনার ভেতর থেকে আপনিটা হারিয়ে যেতে থাকবে।

আপনি ফিল করবেন আপনার সেই আপনির খোজে বের হওয়া দরকার। তখন শুরু হবে ডিভাইডেড লয়ালটি টাইম। মনে হবে, নাহ, এই খাচা ভেঙ্গে আমাকে পালাতে হবে।

আবার মনে হবে, এইটা খাচা না, এইটাই ফিরদৌস পার রুয়ে জামিন আস্ত!!

সমস্ত ফ্যামিলিতে সমস্যা থাকে। আমাদের আগের দুইটা জেনারেশান ফ্যামিলি ভেঙ্গে ফেলার মধ্যে দিয়ে ক্রাইসিস মোকাবিলা করতে চেয়েছে।

আমাদের হাতে এখন অপশন আছে, ফ্যামিলি জিনিসটাই নাই করে দেয়ার।

আমরা কি এই অপশন গ্রহন করবো??

ধরা যাক, সংখ্যায় সমান দুটো অংশের একটা অংশ গ্রহন করবে, আরেকটা অংশ করবে না।

যে অংশটা গ্রহন করবে, তারা ফ্যামিলি ফর্ম করবে না। তারা পরের জেনারেশনে সংখ্যায় কমে যাবে। তাদের জিন কম সারভাইভ করবে।

 স্ট্রেস কমানোর নিনজা টেকনিক

যে অংশটা ফ্যামিলি নাই করে দেয়ার অপশন রিজেক্ট করবে তাদের সংখ্যা জেনারেশন টু জেনারেশন বাড়বে।

এইভাবে একটা সময়, যারা ফ্যামিলি রেইজ করতে চায় তারা আবার ডমিন্যান্ট হয়ে যাবে।

এইভাবেই, থ্রু আউট হিউম্যান হিস্টোরি, ফ্যামিলি টিকে থেকেছে, কারন ফ্যামিলি ইজ দ্যা বেস্ট ফর্ম ফর রিপ্রোডাক্টিভ সারভাইভাল।

আপনি অন্য অনেকভাবে সারভাইভ করতে পারলেও ফ্যামিলি ছাড়া নিজের জিনকে এত ইফিসিয়েন্টলি রক্ষা করতে পারবেন না।

এইজন্যই একটা বয়স হয়ে যাবার পর দেখবেন বাবা মা-মুরুব্বীরা অবসেসিভ ভাবে বাচ্চা চায় আমাদের কাছে। দাদা-দাদী-নানা-নানীরা চায় নাতি নাতনি।

কারন আপনার বয়স যখন ষাট-পয়ষট্টি হয়ে যাবে, আপনি অবচেতনে জানবেন আপনার বায়োলজিক্যাল ক্লক থেমে যাবার সময় হয়েছে। আপনার বডি আপনাকে বারবার সাবধান করবে, ম্যান, তোমার ডিএনএ কয় জেনারেশনে গেল?? তোমার অস্তিত্ব এই পৃথিবীতে তুমি কিভাবে রেখে যাইতেসো??

তখন আপনার অবচেতন মন বারবার খুজবে আপনার ডিএনএর টুকরাগুলাকে। হোয়্যার আর দে!!

নাতি-নাতনি মুরুব্বীদের ডিএনএর টুকরা। তারা জানে, তাদের বায়োলজিক্যাল ক্লক থেমে যাইতেসে।

ঘড়ি থেমে যাওয়ার আগেই তারা চায় তাদের রক্ত, বংশ, ডিএনএ পরের প্রজন্মে পাস করুক।

আপনার বয়স ১৬ বছর হবার পর আপনি যে সেক্স করার প্রেসার ফিল করতেন নিজের ভেতরে, ৫৬ বছরে সেই প্রেসারটা হবে নিজের ডিএনএকে পরের জেনারেশনে ফ্লো হতে দেখার প্রেসার। দুইটারই একই উৎস, ইভোলিউশান, দ্যা গ্র‍্যান্ড আর্কিটেক্টস ডিজাইন।

তাই মা বাবা যখন আপনার কাছে নাতি-নাতনীর মুখ দেখতে চাবে, তাদেরকে রুক্ষ কথা বলবেন না, কারন আপনি জানেন না সে বয়সে আপনি কেমন বোধ করবেন। পৃথিবীটা শুধু আপনি ও আপনার প্রজন্ম না।

কোটি ফোটা জল জমাটবাধা এক টুকরো মেঘের কেবল একটা ফোটা আপনি। আরো অনেক ফোটা জল আছে, আছে অনেক মেঘ, অনেক আকাশ।

নিজেকে, নিজের কালচারাল ভ্যালুজকে সমগ্র আসমান ভাবার দরকার নেই।

কেউ যদি অতিরিক্ত মানসিক চাপ সৃষ্টি করে সেটা তার দোষ, সন্দেহ নেই, কিন্তু জেনারেলি এই টেন্ডেন্সিটা খারাপ না।

আমরা টিকে আছি এভাবেই।

আজ থেকে পাচ হাজার বছর আগে, বেচে থাকাটা এতটা সহজ ছিল না।

মানুষ সন্তান নেওয়া ও নাতিপুতির মুখ দেখার জন্য এত অবসেসিভ, এই ব্যাপারটার কারনেই মানুষ বাচ্চাকে এতটা যত্ন করেছে, আর এভাবেই আমরা টিকে আছি।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন

যোগাযোগ ফর্ম