বাচ্চাদের পাতলা পায়খানা হলে করণীয়। পাতলা পায়খানার সিরাপের নাম

বাচ্চাদের পাতলা পায়খানা হলে করণীয়। পাতলা পায়খানার সিরাপের নাম

শিশুমৃত্যুর যত কারণ রয়েছে সেগুলোর মধ্যে পাতলা পায়খানা বা ডায়রিয়া দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মারাত্মক। অর্থাৎ পাতলা পায়খানা হলে শিশুর প্রাণনাশের আশংকা দেখা যায় বেশি। অন্য বয়সীদের মধ্যে ডায়রিয়া প্রাণ সংশয়ের সৃষ্টি না করলেও ছোট বাচ্চাদের মধ্যে এটা এক ভয়ানক রোগ। তাই সতর্ক থাকতে বাচ্চাদের পাতলা পায়খানার সিরাপ, পাতলা পায়খানার সময় করণীয় সম্পর্কে জেনে নেয়া উচিত। এই বিষয়গুলো জানা থাকলে বাচ্চার জীবন বাঁচাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া যায়। 

জেনে নিন বাচ্চাদের পাতলা পায়খানার সিরাপ সহ আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ করণীয়। 

বাচ্চাদের পাতলা পায়খানার কারণ

বড়দের মতো বাচ্চাদের পাকস্থলী ততটা পরিপক্ব নয়। বাচ্চাদের পাকস্থলী ও পরিপাকতন্ত্র হয় দূর্বল। তাই অন্যান্য বয়সীদের তুলনায় বাচ্চাদের পাতলা পায়খানার ঘটনা বেশি হয়।

কিছু ভাইরাস, পরজীবি জীবাণু মূলত পাতলা পায়খানার জন্য দায়ী। ভাইরাসের মধ্যে রোটা নামক ভাইরাসের কারণে এই ঘটনা বেশি ঘটে। এই ভাইরাসটি দেহে বিভিন্নভাবে প্রবেশ করে থাকে। অস্বাস্থ্যকর খাবার ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ থেকেই এই ভাইরাস প্রবেশ করে। ভাইরাসের কারণে যদি হয় তাহলে শুধু পায়খানা খুবই হালকা ও পানির মতো হতে পারে। সাদা রঙের ফেনা থাকে তাতে।

আবার মানবদেহের অন্ত্রে অসংখ্য ব্যাকটেরিয়া ও পরজীবি রয়েছে। সেগুলোর মধ্যে কিছু আছে ক্ষতিকর। সেই ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া ও পরজীবির কারণেও পাতলা পায়খানা হয়ে থাকে। ব্যাকটেরিয়া ও পরজীবির কারণে পাতলা পায়খানা হলে পায়খানা পাতলা তো হবেই, সাথে পায়খানা বা মলের সাথে রক্তও থাকে। 

 আমাশয় রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা

অন্যান্য কারণের মধ্যে কিছু কারণ হলো অ্যালার্জি, কিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া, পেটের বিভিন্ন অসুখ, বাচ্চাকে ঠাণ্ডা ও বাসি খাবার খাওয়ানো।

বাচ্চাদের পাতলা পায়খানার সিরাপ ও করণীয় 

কোডিনজাত বিভিন্ন টেবলেট ও সিরাপ, লোপেরামাইড, সিপ্রোফ্লক্সাসিন ও এজিথ্রোমাইসিন এর এন্টিবায়োটিক, ফ্লাজিল, জিংক ট্যাবলেট, এসপিরিন,  প্যারাসিটামলের মতো ওষুধ গুলো পাতলা পায়খানার জন্য ব্যবহার করে থাকে ফার্মেসি আর কিছু ডাক্তাররা। 

কিন্তু বাচ্চাদের জন্য এই ওষুধ গুলো উপকারের তুলনায় ক্ষতিই বেশি করে। আগেই বলেছি বাচ্চাদের পাকস্থলী দূর্বল থাকে। তাই এত হাই ডোজের ওষুধ তাদের জন্য সুবিধাজনক নয়।

জিংকের ট্যাবলেট ও সিরাপ খাওয়ানো যাবে। কারণ জিংক হচ্ছে শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় একটি উপাদান। জিংকের ওষুধ ছাড়া আর যে ওষুধের নাম উপরে বললাম, সেই ওষুধ গুলো পাতলা পায়খানা কমায় না। সেগুলো শুধু অন্ত্রে তরলের পরিমাণ কমাতে কাজ করে। অন্ত্রে তরল ঠিক হয়ে আসলে পাতলা পায়খানা বন্ধ হয়। কিন্তু সেই ওষুধ গুলোর বেশিরভাগই অন্ত্রে তরলের পরিমাণ আরও কমিয়ে দিতে দিতে কোষ্ঠকাঠিন্য সৃষ্টি করে দেয় ।  

 ফিলমেট সিরাপ খাওয়ার নিয়ম এবং এর উপকারিতা

তাই বাচ্চাদের ছোট্ট পাকস্থলীর কথা মাথায় রেখেই তাদেরকে ওষুধ দিবেন।

বাচ্চাদের পাতলা পায়খানা বন্ধ করার সবচেয়ে সহজ ও নিরাপদ পদ্ধতি হচ্ছে স্যালাইন খাওয়ানো, পর্যাপ্ত পানি পান করানো। বাজারে এসএমসি অনুমোদিত "ওরস্যালাইন " পাওয়া যায় যা বাচ্চাদের পাতলা পায়খানা বন্ধ করতে কার্যকর করে প্রমাণিত হয়েছে এবং স্যালাইনটি অনেক সুনাম লাভ করেছে। 

বাচ্চাকে বিশ্রামে রাখুন। ২-৩ দিন গোসল করানো বন্ধ রাখুন। ডাবের পানি অথবা হালকা গরম তরল খাবার ( বিশেষ করে স্যুপ) ও স্যালাইন খাওয়ান দিনে ৪-৫ বার। যতক্ষণ পাতলা পায়খানা থাকবে, ততক্ষণই এই কাজগুলো করুন। ৪-৫ দিন বা বেশি হলে ৮-১০ দিনের মধ্যেই বাচ্চাদের পাতলা পায়খানা ভালো হয়ে যাবে।

শেষকথা 

ওষুধের ঝুঁকি না নিয়ে সহজ করণীয় গুলো মেনে বাচ্চার যত্ন নিন। অবস্থা গুরুতর হতে থাকলে নিকটস্থ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যান।

বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কোনো ওষুধ খাবেন না।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন

যোগাযোগ ফর্ম