ফল খেলে কি ওজন কমে? জেনে নিন বিস্তারিত

 

ফল খেলে কি ওজন কমে? জেনে নিন বিস্তারিত

ফল খাওয়াকে অনেকেই ওয়েট লস ফ্রেন্ডলি মনে করে থাকেন। কিন্তু বাস্তবে, ফল কিন্তু ওয়েট লসে বাড়তি কোন সুবিধা দেয় না।

ফলে মূলত থাকে ফ্রুক্টোজ, গ্লুকোজ, ম্যাল্টোজ আর ফাইবার।

এর মধ্যে ফ্রুক্টোজকে মাইটোকন্ড্রিয়াল পয়জন হিসেবে বিবেচনা করা হয়। মানুষের মধ্যেও এই জিনগত পরিবর্তন রয়েছে, যা আমাদের পূর্বপুরুষদের বেচে থাকার জন্য সহায়ক ছিলো। তারা ফল খেতেন রেডিমেড এনার্জির জন্য, ওজন বাড়ানোর জন্য। কিন্তু বর্তমানে, সারা বছর প্রচুর পরিমাণে খাবার পাওয়া যায় এবং আমরা প্রচুর খাবার খাই। তাই বর্তমানের এই কন্ডিশনে আমাদের বেলায় এটিকে আগের মত সহায়ক ভাবাটা আসলে ভুল।

কেউ যদি স্বাদের জন্য কিছু স্টার্চি খাবার রাখতে চায় সেক্ষেত্রে মিষ্টি কোন খাবার না রেখে বরং আস্ত ফল রাখা যায়। কেননা গোটা ফলে গ্লুকোজ এবং ফ্রুক্টোজের পাশাপাশি ভালো পরিমানে ফাইবার এবং পানি থাকে যা ব্লাড সুগার লেভেল বাড়ানোর প্রসেসকে স্লোডাউন করে দিতে পারে। কিন্তু মূল সমস্যা তখনই হয় যখন ফল থেকে স্মুদি বা জুস বানানো অথবা ড্রাই করা হয়। এক্ষেত্রে দেখা যায় তার ফাইবার এবং ওয়াটার কন্টেন্ট চলে যাওয়ার ফলে শুধুমাত্র সুগার কন্টেন্ট থেকে যায়। এই সুগার কন্টেন্ট ডায়বেটিক রোগী বা ওবেসিটিতে আক্রান্ত রোগীর জন্য অনেকটা চিনির মতই কাজ করে, গ্লুকোজ রক্তে ঘোরাঘুরি করে আর ফ্রুক্টোজ সরাসরি চলে যায় লিভারে। মূল উপাদান আসলে একই, সেটা ফল থেকে আসুক বা চিনি থেকে।

অতিরিক্ত চিনি খেলে হতে পারে যে সমস্ত রোগ

অধিকাংশ মানুষই মনে করেন ফল প্রসেসড খাবার না, এটি প্রাকৃতিক খাবার তাই এটি হেলদি। কিন্তু আমরা প্রায়ই ভুলে যাই বর্তমানে আমরা যে ফ্রুট খাই তা মোটেও ন্যাচারাল নয়। প্রাচীন সময়ে আদি মানুষেরা জঙ্গল থেকে যেরকম ফল সংগ্রহ করে খেতো তার মধ্যে এবং বর্তমান সময়ে যে ফল আমরা খাই তার মধ্যে ব্যাপক পার্থক্য রয়েছে। বর্তমান সময়ের ফল আসলে হাজার হাজার বছর ধরে মানুষের জাত নির্বাচনের মাধ্যমে উঠে আসা সবচে মিষ্টি স্বাদ তথা হাই গ্লুকোজ-ফ্রুক্টোজ কনটেন্টের অধিকারী।

আপনিই ভেবে দেখুন, আপনি যদি একজন চাষী হন, আপনি কি টক আম চাষ করবেন নাকি মিষ্টি?? কড়া মিষ্টি খেজুর বা কাঠাল চাষ করবেন না পানসেটা??

এই ব্যাপারটা কিন্তু শত সহস্র প্রজন্ম ধরে হয়ে এসেছে।

এখন, ফল কি তাহলে স্বাস্থ্যকর না অস্বাস্থ্যকর??

সহজ উত্তর, ফল স্বাস্থ্যকর খাবার। স্বাস্থ্যকর খাবারের একটি অন্যতম গুন হল এগুলো খেলে আপনি রেডি এনার্জি পাবেন অথবা এতে প্রচুর ভিটামিন/মিনারেল/প্রোটিন/এনজাইম/ফাইটোনিউট্রিয়েন্টস থাকবে।

এই হিসেবে, অধিকাংশ ফল স্বাস্থ্যকর।

যাদের মেটাবোলিজম ঠিক আছে, ডায়বেটিস বা অন্য কোন হরমোনাল সমস্যা নেই, তাদের জন্য ফল একেবারেই স্বাভাবিক খাবার। কিন্তু যাদের হরমোনাল ওয়েট গেইন, ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স, হাইপোথাইরয়েডিজম ইত্যাদি সমস্যা আছে এবং ওজন কমাতে চেষ্টা করছেন, মিষ্টি ফল তাদের জন্য নয়, চাইলে টক স্বাদের সুগার কম এমন ফল তারা খেতে পারেন।

তবে মনে রাখলে ভাল করবেন যে ফল এমনিতে ওজন কমাতে সাহায্য করে না। শুধুমাত্র তাদেরই ফল খেয়ে ক্ষনস্থায়ী ওয়েট লস হতে পারে যারা কোক/আলু/ভাত/ফাস্ট ফুড বাদ দিয়ে ফল খাচ্ছেন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন

যোগাযোগ ফর্ম