জন্মনিয়ন্ত্রণের প্রাকৃতিক পদ্ধতি

জন্মনিয়ন্ত্রণের প্রাকৃতিক পদ্ধতি

 জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহার করে অনাকাঙ্ক্ষিত গর্ভধারণ এর  ঝুঁকি এড়ানো যায়। আধুনিক যুগে জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল ( ট্যাবলেট),  পুরুষদের কনডম, নারীদের কনডম ব্যবহার করে অনাকাঙ্ক্ষিত গর্ভধারণ ও অনিরাপদ যৌন সম্পর্ক থেকে মুক্ত থাকার উপায় অবলম্বন করে বিশ্বের অনেক মানুষই। আবার কেউ কেউ কৃত্রিম কোনো জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহার করতে অনীহা দেখায়। তারা জন্মনিয়ন্ত্রণ করার প্রাকৃতিক পদ্ধতি ব্যবহারে আগ্রহী। কিন্ত সবাই জানে না কীভাবে জন্মনিয়ন্ত্রণ করার প্রাকৃতিক পদ্ধতি ব্যবহার করতে হয়।

যারা জানেনা তাদেরকে প্রাকৃতিক পদ্ধতি সম্পর্কে সঠিক ধারণা দিতেই এই পোস্ট। 

জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি 

বিবাহিত কিংবা অবিবাহিত - সকল মানুষেরই যৌন চাহিদা রয়েছে। যৌনতার জন্য তারা বিভিন্ন পন্থা অবলম্বন করে। অবিবাহিতদের যৌন সম্পর্ক কে অবৈধ সম্পর্ক বলা হয়। বেশিরভাগ অবিবাহিত নারী পুরুষেরা তাদের সঙ্গীর সাথে যৌন সম্পর্ক করার সময় আধুনিক ও কৃত্রিম জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহার করে যাতে অনাকাঙ্ক্ষিত কোনো ঘটনা না ঘটে। অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাগুলোর মধ্যে হলো - অনাকাঙ্ক্ষিত গর্ভধারণ, যৌন বাহিত রোগ ছড়ানো।

আর বিবাহিত নারী পুরুষেরাও সন্তান নেয়ার নির্দিষ্ট সময়ের আগ পর্যন্ত জন্মনিয়ন্ত্রণের পদ্ধতি মেনে সহবাস করে। বেশিরভাগ বিবাহিত দম্পতির আশা থাকে কোনো কৃত্রিম পদ্ধতি ব্যবহার না করে প্রাকৃতিক জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহার করার। কিন্তু সবাই সেই পদ্ধতি সঠিকভাবে জানে না, মেনে চলতে পারে না। তখন না চাইলেও অনাকাঙ্ক্ষিত গর্ভধারণ হয়ে যায়। 

সেই দম্পতিদের সঠিক ধারণা দেয়া হবে এই লেখার মাধ্যমে। 

জন্মনিয়ন্ত্রণ করার প্রাকৃতিক পদ্ধতি 

বহুল প্রচলিত কিছু পদ্ধতির সঠিক উপায়গুলো নিম্নরূপ 

মাসিক চক্র বা মেনস্ট্রুয়াল সার্কেল হিসাব

মাসিক বা পিরিয়ড প্রতিটি নারীর জীবনের অংশ যা প্রাকৃতিকভাবে নির্ধারিত। এই পিরিয়ড চক্রের দিনক্ষণ হিসাব করে সহবাস করলে জন্মনিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। 

প্রতি মাসেই যেহেতু নারীর পিরিয়ড হয়, সেহেতু কবে থেকে পিরিয়ড শুরু হয় ও কবে শেষ হয় সেই তারিখ ভালোভাবে লক্ষ্য করে সহবাস করতে হবে। পিরিয়ড শুরু হওয়ার প্রথম ৭ দিনের মধ্যে সহবাস করলে গর্ভধারণের সম্ভাবণা নেই। অর্থাৎ সেই ৭ দিন নিরাপদ সময়। আবার পিরিয়ড শুরু হবে যেদিন, সেদিন থেকে শুরু করে পিরিয়ড শেষ হওয়ার পরের ৭ দিনও নিরাপদ সময়। 

মাসিক যেহেতু ৩০ দিনে একবার হয়, সেহেতু মাসিকের প্রথম ৭ দিন ও পরের ৭ দিন মোট ১৪ দিন হচ্ছে নিরাপদ সময়। আর বাড়তি সতর্কতার জন্য পিরিয়ড শুরু হওয়ার আগের দিন থেকে ও শেষ হওয়ার পরের দিন পর্যন্ত অনিরাপদ 

 যৌন সম্পর্ক স্থাপন করা যাবে না। তাহলে ১৪ দিন থেকে আরও ২ দিন বাদ দিলে থাকে ১২ দিন। মাসের ৩০ দিন থেকে ১২ দিন বাদ দিলে অবশিষ্ট থাকে ১৮ দিন। সেই ১৮ দিন হচ্ছে অনিরাপদ সময়। এই ১৮ দিন ছাড়া মাসের বাকি ১২ দিন কোনো পিল, কনডম ব্যবহার না করেই নিরাপদ যৌন সম্পর্ক করতে পারবেন।

আর যদি ২৮ দিন পরপর বা ২৫ দিন পরপর পিরিয়ড হয়, তাহলেও হিসাব অনুযায়ী ১৮ দিন বাদ দিতে হবে। ২৮ থেকে ১৮ বাদ দিলে ১০ দিন, ২৫ থেকে ১৮ বাদ দিলে ৭ দিন হচ্ছে নিরাপদ। কিন্তু যাদের অনিয়মিত পিরিয়ড হয়, তারা এই পদ্ধতি ব্যবহার না করাই ভালো। কারণ মাসিক অনিয়মিত হওয়ায় সঠিক দিনতারিখ নির্ধারণ করা মুশকিল।

সার্ভিক্যাল বা জরায়ুর মিউকাস পদ্ধতি 

পিরিয়ডের সময়, ডিম্ব স্ফুটনের বা ওভুল্যাশন এর সময় শেষ হলে জরায়ু থেকে পিচ্ছিল তরল নিঃসৃত হয়। এই পিচ্ছিল তরলের পরিমাণ যখন বেশি হবে তার ৩-৪ দিন পর থেকে অনিরাপদ যৌন সম্পর্ক করা যাবে। প্রতিবার প্রস্রাবের পর যোনিপথে সাদা টিস্যু পেপার দিয়ে মোছার সময় অথবা হাত লাগিয়ে সেই পিচ্ছিল তরলের পরিমাণ জানা যায়। 

নারীর শরীরের তাপমাত্রা মেপে নেয়া

ওভুল্যাশনের সময় নারীর শরীরের তাপমাত্রা বেশি হয়ে থাকে। যা ওভুল্যাশন শেষ হওয়ার পরের কয়দিন পর্যন্তও বজায় থাকে। পরে আস্তে আস্তে তাপমাত্রা কমতে থাকে। ওভুল্যাশন এর সময়কাল হয়ে থাকে যে মাসে পিরিয়ড হবে সেই মাসের ১৪ তম থেকে ২৮ দিনের মধ্যে।  ওভুল্যাশন শেষে তাপমাত্রা কমতে শুরু করলে অর্থাৎ ওভুল্যাশন শেষ হওয়ার ৩-৪ দিন পর থেকে অনিরাপদ সহবাস করা যেতে পারে।

শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানোর সময় পদ্ধতি 

সন্তান জন্মদানের পর মাসখানেক পিরিয়ড বন্ধ থাকে। পিরিয়ড বন্ধ থাকার সেই সময়গুলোতে কোনো কৃত্রিম পদ্ধতি প্রয়োগ না করে সেক্স করা যাবে।

বীর্য বাইরে ফেলার পদ্ধতি 

এটিই সবচেয়ে প্রচলিত পদ্ধতি। সহবার করার সময় যখন বীর্য বের হওয়ার উপক্রম হবে তখন যোনি থেকে পুরুষের লিঙ্গ বের করে নিয়ে বাইরে বীর্য ফেলতে হবে। জন্মনিয়ন্ত্রণ করার প্রাকৃতিক পদ্ধতি গুলোর মধ্যে এটিই সবচেয়ে সহজ ও নিরাপদ পদ্ধতি।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন

যোগাযোগ ফর্ম