লেক্সাস বিস্কুট কি আসলে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী?

লেক্সাস বিস্কুট কি আসলে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী?


লেক্সাস ব্র্যান্ডের বিস্কুট আমাদের দেশে খুব পরিচিত একটি বিস্কুট। বিশেষ করে ডায়াবেটিস রোগীদের কাছে এটি ডায়াবেটিস বিস্কুট হিসাবে পরিচিত। বিভিন্ন কোম্পানি লেক্সাস বিস্কুট তৈরী করে থাকে। আজকের পোস্টে আমরা জানবো লেক্সাস বিস্কুট ডায়াবেটিস রোগীদের কতটা উপকার করে। 

লেক্সাস বিস্কুটের উপাদান 

লেক্সাস বিস্কুট আমাদের ডায়েট কালচারে একরকম ডায়বেটিক বিস্কুট হিসেবে এস্ট্যাবলিশড হয়ে গেছে।

বাস্তবে, লেক্সাসের অবস্থাটা হল এর টোটাল ক্যালরি ভ্যালুর ৬৮% কার্বোহাইড্রেট, যার মধ্যে ১১% আবার সরাসরি সুগার। এই ৬৮% কার্বোহাইড্রেট মূলত হাই জিআই(৮৫) হুইট ফ্লাওয়ার যার গ্লাইসেমিক লোড ৫৮.৬ এবং ইনসুলিন ইনডেক্স-১০০ , আইমিন দ্রুত ব্লাড গ্লুকোজ বাড়ে, আবার বেশি ইনসুলিনও নিসৃত হয়।

লেক্সাসের ক্যালরির ২৫% হচ্ছে ফ্যাট থেকে নেয়া। এই ফ্যাটগুলো হচ্ছে মেইনলি পাম অয়েল ও বাটার, আই মিন স্যাচুরেটেড ফ্যাট বেশি, পলি আনস্যাচুরেটেড কম। স্যাচুরেটেড ফ্যাটকে লেইটেস্ট সায়েন্টিফিক লিটারেচারে আনহেলদি বলার ট্রেন্ডটা এখন কমে এসেছে। কিন্তু হাই জিআই রিফাইন্ড কার্বের সাথে স্যাচুরেটেড ফ্যাটের কম্বিনেশানটা ভাল না, এইটা ব্লাডে ফ্রি ফ্যাটি এসিড লেভেল বাড়ানোর জন্য উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টিতে সক্ষম যদি বেশি পরিমানে খাওয়া হয়। ভাগ্যিস, লেক্সাস কেউ বেশি পরিমানে খায় না।

ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকা 

এখন, দেখা যায় লেক্সাস তারাই বেশি খান, যারা সারাদিনই একটু একটু করে কার্ব খেতে থাকেন। তাদের অনেকেই জেনারেলি ইনসুলিন নিয়ে থাকেন গ্লুকোজ কন্ট্রোলের জন্য।

এধরনের রোগীদের খাদ্যাভ্যাস সাধারনত ভাল থাকে না, ফলে আলাদাভাবে লেক্সাস তার উল্লেখযোগ্য ক্ষতি করবে এই উপসংহারে আসাটা কঠিন।

কিন্তু লেক্সাসের ম্যাক্রোনিউট্রিয়েন্ট প্রোফাইল এনালিসিস করে বলা যায়, এটা রুচি নিয়ন্ত্রনের জন্য আপনাকে উল্লেখযোগ্য কোন সহায়তা করতে পারবে না।

ঘন ঘন যাদের গ্লুকোজ লেভেল ফল করে, তাদের জন্য লেক্সাস উল্লেখযোগ্য কোন সমাধান নয়, কেননা এটার গ্লাইসেমিক ইন্ডেক্স বেশি এবং ইনসুলিন ইন্ডেক্সও বেশি। এর চাইতে পেয়ারাজাতীয় ফল বা চীনাবাদাম এমনকি খেজুরও বেশি সময় ক্ষুধা নিবারনে সহায়ক হতে পারে। যদিও খেজুরে চিনির পরিমান বেশি থাকায় সব ডায়বেটিক প্যাশেন্টকে এটা খেতে বলা উচিত নয়।

সব মিলিয়ে, লেক্সাস জাতীয় বিস্কিটকে ডায়বেটিক ফুড বলার বৈজ্ঞানিক কোন ভিত্তি আছে বলে আমি খুজে বের করতে পারি নি। হয়তো আমার জানার বাইরে অন্য কিছু আছে যেকারনে অনেক ডায়েটিশিয়ান এটা লিখে থাকেন। অথবা একজনের দেখাদেখি দশজনও লিখে থাকতে পারেন।

অধিকাংশ ডায়বেটিক ডায়েট চার্ট যেহেতু ক্যালরি নির্ভর হয় তাই সেখানে সার্ভিংয়ের হিসাব মেলানোটা গুরুত্বপূর্ণ। হিসাব মেলানোর জন্যও প্রায়ই এরকম রিফাইন্ড কার্ব লেখার টেন্ডেন্সি কোন কোন ক্ষেত্রে ইউনিভার্সিটি লেভেলে শেখানোর সময় টিচারদের মধ্যে লক্ষ্য করা যায়।

সারা পৃথিবীর সমস্ত ওয়েল ইনফর্মড হেলথ কমিউনিটি এখন থেকে ১০ বছর আগেই হোল ফুডসের দিকে ঝুকেছে, প্রসেসড ফুড এড়িয়ে চলছে। আমাদেরও সেদিকেই ধাবিত হওয়া উচিত বলে আমি মনে করি। 

ডায়বেটিক প্যাশেন্টের ডায়েটে লো জিআই-মডারেট টু লো জিএল ফুড থাকা উচিত যার ইনসুলিন ইন্ডেক্স হবে লো। ফলে প্যাশেন্টের ক্ষুধা সহ্য করার ক্ষমতা যেমন বাড়বে তেমনি স্বাভাবিক থাকবে ব্লাড গ্লুকোজও।

পোস্টটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

comment url