ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে শারীরিক ব্যায়ামের গুরুত্ব

 

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে শারীরিক ব্যায়ামের গুরুত্ব

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে ব্যায়ামের গুরুত্ব

আপনি যদি চান যে আপনার কখনো ডায়বেটিস না হোক, অথবা যদি আপনি চান যে, আপনার ব্লাড সুগার সবসময় ইনসুলিন ছাড়াই কন্ট্রোলে থাকুক, আপনার ব্যায়াম করা উচিত।

সঠিক মাত্রায় ব্যায়াম আমাদের শরীরের গ্লুকোজ মেটাবলিজম পুরোপুরি বদলে দিতে পারে, যার মাধ্যমে বাড়তি কোন সাপ্লিমেন্টস বা সুপারফুড ছাড়াই আপনার শরীর গ্লুকোজকে চমৎকারভাবে ব্যবহার করা শুরু করে।

যে হরমোনটা আমাদের ব্লাড থেকে গ্লুকোজ নিয়ে মাসল সেলে পৌছে দেয় তা হচ্ছে ইনসুলিন। টাইপ টু ডায়বেটিসের একদম কোর প্রবলেমগুলোর একটা হচ্ছে, ব্লাড থেকে গ্লুকোজ মাসলে বা লিভারে ঠিকভাবে জমা হতে পারে না।

এর কারন হচ্ছেঃ

১)কোষের ভেতর স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি মাত্রায় গ্লুকোজ গ্লাইকোজেন আকারে ডিপোজিট থাকতে পারে, ফলে কোষ গ্লুকোজ গ্রহন করতে চায় না। এই পরিস্থিতিতে বাড়তি গ্লুকোজ কোষে প্রবেশ করাতে আমাদের ইনসুলিন বা গ্লুকোজ লোয়ারিং ড্রাগ প্রয়োজন হয়, তাতে রক্তের গ্লুকোজ কমলেও কোষের গ্লুকোজ কোড বাড়ে এবং কোষে গ্লুকোটক্সিসিটি তৈরি হয়। ফলে বাড়ে ভবিষ্যতে মেটাবলিক ডিজিজের সম্ভাবনা।

২)কোষে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি গ্লাইকোজেন ও ইনসুলিন লোড থাকলে অগ্ন্যাশয় থেকে তৈরি হওয়া ইনসুলিন কোষে সহজে প্রবেশ করতে পারে না। এই অবস্থাকে বলা হয় ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স। এধরনের পরিস্থিতিতে দিনকে দিন আমাদের বেশি ইনসুলিন ব্যবহার করতে হয়।

ডেঙ্গু জ্বর হলে করণীয় ও চিকিৎসা

৩)অতিরিক্ত ইনসুলিন/গ্লাইকোজেনের উপস্থিতিতে কোষে থাকা মাইটোকন্ড্রিয়াগুলোর এটিপি বা এনার্জি কয়েন তৈরি করার ক্ষময়া কমে যায় এবং মাইটোকন্ড্রিয়াগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয় যাকে আমরা মাইটোফ্যাজি বলি। মাইটোফ্যাজি মূলত I3PK এবং mTOR পাথওয়েকে ক্ষতিগ্রস্ত করার ফলে হয়। ফলে আমরা খাওয়া দাওয়া করলেও একপ্রকার শক্তিহীনতা বোধ করতে থাকি কারন মাইটোকন্ড্রিয়া শক্তি উৎপাদন করে না। পক্ষান্তরে, হাইপারইনসুলিনেমিয়ার কারনে নতুন মাইটোকন্ড্রিয়া সৃষ্টির যে প্রক্রিয়া, মাইটোজেনেসিস তা থেমে যায়, পুরানো মাইটোকন্ড্রিয়ার মেরামত প্রক্রিয়াও থেমে থাকে।

ব্যায়াম, এই সবগুলো প্রক্রিয়াকেই রিভার্স করে দিতে ভুমিকা রাখে।

ব্যায়াম আপনার ইনসুলিন সেন্সিটিভিটি বাড়ায়, কোষের গ্লুকোজ বার্ন রেট বাড়ায় এবং মাইটোকন্ড্রিয়াকে রিজেনারেট করে। ফলে একটু বেশি খেয়েও একজন ব্যায়াম করা মানুষ থাকতে পারেন সুস্থ-স্বাভাবিক।

তাই ডায়বেটিক-নন ডায়বেটিক যেটাই হোন না কেন, প্লিজ ব্যায়াম করুন!!

আর হ্যা, যত ব্যায়ামই করুন না কেন, চিনি এবং অতিরিক্ত ভাত-রুটি-আলু খেলে কিন্তু ব্লাড গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রনে থাকবে না।

তাই ডায়বেটিকদের সুস্থ থাকতে চাই ব্যায়ামের সাথে মডারেট বা লো কার্ব ডায়েট।

নিউট্রিশনিস্ট সজল।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন

যোগাযোগ ফর্ম